বিশালগড়ের পত্রিকা হকার প্রবীর রায়ের অকাল মৃত্যুতে সর্বশান্ত পরিবারের পাশে জালাল খেদমত আল ইনসান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলী আশ্রব মিঞা ওরফে জালাল মিঞা।
শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের জন্য আর্থিক সাহায্য ও বিভিন্ন সামগ্রী তুলে দেন প্রয়াত পত্রিকা হকার প্রবীর রায়ের স্ত্রী সুমিত্রা রায়ের হাতে। বুধবার বিশালগড় নেতাজি নগর এলাকায় প্রবীর রায়ের বাড়িতে গিয়ে জানা যায় গত ২০ জুলাই নিজ বাড়িতে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করেন প্রবীর রায়। সুমিত্রা দেবী জানান গত ২৫ বছর ধরে তার স্বামী এই হকারী কাজের সঙ্গে যুক্ত।
একমাত্র এই কাজ থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়েই কোন রকমে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বেড়ে উঠা সংসার প্রতিপালিত হত প্রবীর বাবুর। এইভাবে অকালে তার স্বামী চলে যাবেন স্বপ্নেও ভাবেনি সুমিত্রা দেবী ও তার সন্তানেরা। তাদের বুক ফাটা আত্মনাদে সেদিন নেতাজি নগরের আকাশ বাতাস কম্পিত হয়। পাড়ার প্রতিটা মানুষের চোখের জলে শেষ বিদায় হয় প্রবীর রায়ের। এদিকে এই বছর মাধ্যমিক পাস করা কন্যা পাপিয়া ও প্রথম শ্রীনিতে পড়োয়া আরুষ এই দুই সন্তান নিয়ে কীভাবে কি করবেন এই কথা বলে বারংবার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পাড়া প্রতিবেশী ও আত্নীয় পরিজনরা বারবার শান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কোন শান্তনাতেই সুমিত্রা দেবী নিজেকে শান্ত করতে পারছিলেন না। কারণ তার স্বামী ছিলেন সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তি। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে কিভাবে সংসার প্রতিপালন করবেন শুধু এই কথাই বলছেন। আগামী শুক্রবার দিন স্বামীর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান। শ্রাদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ নেই হাতে। সাহায্য করার জন্য তেমন কেউ এগিয়ে আসেননি , আর এই খবর কানে আসে জালাল খেদমত আল ইনসান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলী আশ্রব মিঞা ওরফে জালাল মিঞার। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উদয়পুর থেকে বিশালগড় নেতাজি নগর এলাকায় ছুটে যান জালাল মিঞা। নিজের হাতে আর্থিক সাহায্য ও বিভিন্ন শ্রাদ্ধ সামগ্রী তুলে দেন প্রয়াত হকার প্রবীর রায়ের স্ত্রী সুমিত্রা দেবীর হাতে। সাহায্য পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি সুমিত্রা দেবী। কৃতজ্ঞতা জানান জালাল বাবুকে। একজন মুসলিম ধর্মাবলম্বী লোক হয়ে হিন্দুর শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে এগিয়ে আসতে দেখে নেতাজি নগরের মানুষ কর্নিশ জানিয়েছেন জালাল বাবুকে। এই কাজের সঙ্গে নিজেকে এইভাবে যুক্ত রাখার জন্য পরামর্শ দেন ওইখানকার মানুষ। সমাজে এখনো যে গরীব দরিদ মানুষ আছেন এটা জালাল মিঞা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন। রবীন্দ্র , নজরুল , সুকান্তের দেশে এখনো যে মানবতা বেঁচে আছে এটা তার আরও একটা প্রমান। জালাল মিঞাদের হাত ধরে এই ভাবে বেঁচে থাকুক বিশ্ব মানবতা।


0 মন্তব্যসমূহ