সোমবার, শিবনগরস্থিত আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ের সামনে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের তঘলুকি ফরমানের বিরুদ্ধে এক বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

 সোমবার, শিবনগরস্থিত আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ের সামনে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের তঘলুকি ফরমানের বিরুদ্ধে এক বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। উক্ত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল মহাশয়। প্রচার সচিব দুলাল ঘোষ সহ আমরা বাঙালী দলের অন্যান্য সদস্য সদস্যরা।


গত ১৮/৮/২৪ ইং তারিখে শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই বছর দুর্গা পূজার দিনেও বিদ্যালয় খোলা থাকবে বলে এক সার্কুলার জারি করে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ডাবল ইন্জিনের সরকারের শিক্ষা দপ্তর রাজ্য সরকারের এলিমেন্টারি এডুকেশনের অধিকর্তা এন সি শর্মা এই নির্দেশ নামায় সিল মোহর স্বাক্ষরিত মেমোরেন্ডামে বলা হয়েছে ভারত সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের এই নির্দেশ। ষষ্ঠী পূজা থেকে নবমী পূজা পর্যন্ত দিন গুলোতে এক টানা বিদ্যালয় খোলা রাখাতে বলা হয়েছে।৬ ই অক্টোবর থেকে ১২ ই অক্টোবর পর্যন্ত Mental Illness Awareness সপ্তাহ (অর্থাৎ মানসিক দুর্বলতা সচেতনতা) হিসেবে দিন গুলোকে কাটাতে। আমরা জানি ভারতবর্ষ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ হিসেবে প্রত্যেক জাতি তার নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার রয়েছে।আর এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ছুটি ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যে তার ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। বাঙালীদের বারো মাসে তেরো পার্বণের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব হলো দুর্গা পূজা।আর এই উৎসব কে ঘিরে বাংলার অন্চলের আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে।আজ এই দুর্গা উৎসব বাংলার অন্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।আজ ভারত বাংলার সীমা অতিক্রম করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেখানেই বাঙালীরা রয়েছে সেখানেই এই উৎসব পালিত হচ্ছে মহা ধুমধামে। তাই দুর্গা উৎসব আজ ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ উৎসব হিসেবে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ডাবল ইন্জিন সরকারের শিক্ষা দপ্তরের বন্ধ না রাখার এই নির্দেশ নামার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সর্বত্র ছিঃ ছিঃ রব উঠেছে।যে সরকারের মূল হাতিয়ার হলো হিন্দুত্ববাদী শ্লোগান। আসলে আমরা দেখতে পাচ্ছি এই হিন্দুত্ববাদী সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই বিদ্যাজোতি প্রকল্পের আওতায় যে সকল বিদ্যালয় এসেছে সেখানে বাঙালীদের ভাষা সংস্কৃতি কৃষ্টি ইতিহাস মুছে দেওয়ার একটি কৌশল কাজ করছে সুকৌশলে।আর তাই এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ভাবাবেগে কিছু কিছু আঘাত আসছে।তারই অঙ্গ হিসেবে এখন বাঙালীদের প্রধান উৎসব দুর্গাপূজাতেও ভাগ বসাতে চাইছে। এতদিন পর্যন্ত প্রচলিত সমস্ত ধরনের ধর্মানুশীলনের প্রথা পদ্ধতি ধ্বংস করে দিয়ে তাদের নিজস্ব কিছু পূজা পার্বণ ও ধর্মীয় ভাবাবেগে চাপিয়ে দিতে চাইছে।আর তা যদি মেনে নেয় তাহলে অচিরেই বাঙালীদের অতীত সংস্কৃতি কৃষ্টি শিক্ষা সাহিত্য উৎসব বিলুপ্ত মানে একটি জাতির অপমৃত্যু। শুধু তাই নয় বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার ভারতে বাংলা ভাষার মতো একটি সমৃদ্ধ ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দেয়নি। শুধু তাই নয় আগামী বছর থেকে নূতন যে জাতীয় শিক্ষানীতি চালু হতে চলেছে সেখানে বাংলা ভাষা যেহেতু ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা পায়নি তাই বাংলা ভাষায় পঠনপাঠন এর সুযোগ থাকছে না ষষ্ট শ্রেণীর পর থেকে।কাজেই এই ভাবে এক এক করে বাঙালীদের সব কিছু কেড়ে নেওয়ার অপপ্রয়াস চলছে। বছর দুয়েক আগে উত্তর প্রদেশের পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সব কিছু বাদ দিয়ে দিয়েছে। তাই এমতাবস্থায় আমরা বাঙালী দল বর্তমান সরকারের বাঙালী বিদ্বেষী মনোভাবের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানানো হয়েছে। সরকার এই নির্দেশ নামা অবিলম্বে বাতিল করে বাঙালীদের শারদীয়া উৎসব উদযাপনে সহযোগিতা করতে আহ্বান জানিয়েছেন।আর না হলে রাজ জুড়ে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন রাজ্য নেতৃত্বরা।কারণ ধর্মীয় উৎসব পালনের সকলের সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ