সংবাদ প্রতিনিধি আগরতলা। বুধবার আজ শিবনগরস্থিত আমরা বাঙালী রাজ্য কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। উক্ত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল, প্রচার সচিব দুলাল ঘোষ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অশোক কুমার দাস সহ আমরা বাঙালী দলের অন্যান্য প্রতিনিধিগণ। রাজ্য বাসী আপনারা অবগত আছেন গত ১৮ ই আগস্ট সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত পায় এবার দুর্গাপূজায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নবমী পূজা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সংবাদ প্রকাশের পরপরই রাজ্য জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয় এবং আমরা বাঙালী দল শিক্ষা দপ্তরের এই ধরনের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র বিরোধিতা করে। এরপর রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর এক সার্কুলার জারি করে ঘোষণা করে পূজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে অর্থাৎ অতীতের নিয়ম বহাল থাকবে। আবার গত পরশু দিন সংবাদ মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এন আই টি) আগরতলা। দুর্গা পূজার সমস্ত ছূটিকে বাতিল করে কেবলমাত্র দশেরা তথা বিজয়া দশমীর দিনটিকেই সরকারী ছুটি হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে যা এই প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে প্রথম।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে দুর্গাপূজা এখন শুধু বাঙালীদেরই উৎসব নয়, ত্রিপুরা তথা ভারতবর্ষ সহ বিশ্বের কোটি কোটি বাঙালীর জাতীয় উৎসব যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের জায়গায় স্থান পেতে চলেছে। তাছাড়া ভারতবর্ষ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। সংবিধান অনুযায়ী এদেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান নির্বিশেষে সব ধর্ম মতাবলম্বী মানুষের ধর্ম চর্চার সমানাধিকার স্বীকৃত।এ অবস্থায় যেখানে মহারাষ্ট্রে গণপতি উৎসবে, উড়িষ্যায় জগন্নাথ উৎসবে,অসমে বিহু উৎসবে কিংবা কেরালার ওনাম উৎসবের সময়ে ছুটিতে কোনো কাটছাঁট নেই। অথচ বাঙালীদের দুর্গোৎসবের মতো জাতীয় উৎসবে চিরাচরিত ছুটি বাতিল করে বাঙালীদের ধর্মীয় আবেগ তথা কৃষ্টি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেবার হীন ষড়যন্ত্র নয় কী? উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আমরা বাঙালী ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি এন আই টি কর্তৃপক্ষ ও রাজ্য সরকারের কাছে আমাদের দাবি শুধু দুর্গোৎসবই নয়,লক্ষী পূজা,কালী পূজা, সরস্বতী পূজার মতো বাঙালীদের যাবতীয় পূজার দিন গুলোতে আগের মতো ছুটি বহাল রাখতে হবে।প্রত্যেকের স্ব স্ব ধর্ম পালনে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে হবে। তাছাড়া আমরা আগে দেখতে পেতাম বড় বড় ক্লাব গুলো আগে দশমীর ২/১ দিন পর বিসর্জন দিত অথচ এই বার কিন্তু দশমীর দিনেই সব মূর্তি বিসর্জন করতে হবে সরকারি নির্দেশ। অথচ গণেশ পূজা শহরে ৩/৪ দিন ধরে চলতে পারে তাতে সরকারের কোনো বাঁধা নেই। তৎসঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে কতিপয় দুষ্কৃতকারীদের দ্বারা সংবাদ প্রতিনিধিদের উপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ করছি এবং অপরাধীদের গ্ৰেপ্তার করে শাস্তি প্রদান করতে হবে।

0 মন্তব্যসমূহ