অবশেষে বিদ্যুৎ পরিসেবা এবং পানীয়জল সরবরাহ স্বাভাবিক করতে মাঠে নামলেন মন্ত্রী টিংকু রায়।
গত ছাব্বিশ এপ্রিল ভয়াবহ ঝড় বৃষ্টি সহ শিলাবৃষ্টির পর চারদিনেও বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থা সাই কম্পিউটার লিমিটেডের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক করতে না পারায় রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা খুবই উদ্বীগ্ন বলে জানান মন্ত্রী টিংকু রায়। চার দিন পরেও কৈলাসহর মহকুমায় সত্তরটি লোকেশনে বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক নয় বলে মন্ত্রী টিংকু রায় ত্রিশ এপ্রিল সংবাদ প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জানান। উল্লেখ্য, গত ছাব্বিশ এপ্রিল গভীর রাতে কৈলাসহরে আচমকা প্রবল ঝড় বৃষ্টি সহ শিলাবৃষ্টির ফলে প্রচুর বাড়ি ঘর, বিদ্যুৎ-এর খুটি ভেংগে যায়। বিদ্যুৎ-এর বেশ কয়েকটি ফিডার, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়। এর পাশাপাশি প্রচুর সব্জি ফসলও নষ্ট হয়ে যায়। ছাব্বিশ এপ্রিল গভীর রাত থেকে গোটা কৈলাসহর মহকুমা অন্ধকার থাকলেও বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থা 'সাই কম্পিউটার লিমিটেডের' পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক করার উদ্যোগ না নেওয়ার ফলে ঊনকোটি জেলার জেলাশাসক দিলীপ কুমার চাকমা এবং কৈলাসহরের মহকুমাশাসক প্রদীপ সরকারের যৌথ প্রচেষ্টায় ঊনত্রিশ এপ্রিল রাতে কৈলাসহরের শহরাঞ্চলের সামান্য কিছু অংশে কিছুটা বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক হলেও বৃহৎ অংশে বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক হয়নি। গোটা কৈলাসহর মহকুমার আশি শতাংশ জায়গায় চার দিন পরেও অর্থাৎ ত্রিশ এপ্রিল মংগলবার সকাল অব্দি বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক ছিলো না। ছাব্বিশ এপ্রিল গভীর রাতে ঝড় বৃষ্টির পরেই সাই কম্পিউটার লিমিটেডের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক করার জন্য কোনো ধরনের উদ্যোগ না নেওয়ার ফলেই ত্রিশ এপ্রিল সকাল অব্দি মহকুমা বাসীরা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। অথচ, কৈলাসহরের বিদ্যুৎ পরিসেবা প্রদানকারী বেসরকারি সংস্থা সাই কম্পিউটার লিমিটেডের পক্ষ থেকে ঊনত্রিশ এপ্রিল বিকাল তিনটায় রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার নিকট রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে যে, কৈলাসহরে ছাব্বিশ এপ্রিল গভীর রাতে প্রবল ঝড় বৃষ্টি পর বিদ্যুৎ পরিসেবা খানিকটা স্তব্ধ থাকলেও আটাশ এপ্রিল সন্ধ্যার মধ্যেই বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক হয়ে যায়। মূখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা এই রিপোর্ট পাবার পর মূখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার যথেষ্ট সন্দেহ হয়। এরপর মানিক সাহা স্থানীয় মন্ত্রী টিংকু রায়ের সাথে যোগাযোগ করার পর জানতে পারেন যে, সাই যে রিপোর্টটি পাঠিয়েছে সেটা একেবারেই ভুল ছিলো। সাথে সাথেই মূখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা মন্ত্রী টিংকু রায়কে কৈলাসহর গিয়ে সরজমিনে তদন্ত করে জন প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে সাই কম্পিউটার লিমিটেডের আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করে বিদ্যুৎ পরিসেবা এবং পানীয়জল সরবরাহ স্বাভাবিক করার জন্য। মূখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী মন্ত্রী টিংকু ত্রিশ এপ্রিল কৈলাসহরে এসে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সাথে কথা বলেন। এরপর কৈলাসহরে পুর পরিসদের কনফারেন্স হলঘরে এক বৈঠকে মিলিত হন মন্ত্রী টিংকু রায়। বৈঠকে মন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৈলাসহর পুর পরিসদের চেয়ারপার্সন চপলা রানী দেবরায়, ভাইস চেয়ারম্যান নীতিশ দে, বিশিষ্ট সমাজসেবী সিদ্ধার্থ দও, অরুন সাহা, চন্ডীপুর পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান সন্দীপ কুর্মী, গৌরনগর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান নারান সিংহ, ভাইস চেয়ারম্যান শিব শংকর অধিকারী সহ গৌরনগর এবং চন্ডীপুর ব্লকের অধীনে সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপ প্রধান সহ পুর পরিসদের কাউন্সিলররা। এই বৈঠকে সাই কম্পিউটার লিমিটেডের পক্ষ থেকে সংস্থার ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হরিন্দর শর্মা, প্রজেক্ট ম্যানেজার সুরজ শ্রীবাস্তব, সংস্থার প্রকৌশলী অজয় কুমার। রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রীর কাছে কেন ভুল রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে এরজন্য বৈঠকে মন্ত্রী টিংকু রায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাই কম্পিউটার লিমিটেডের আধিকারিকদের উপর। বৈঠকে বিশিষ্ট সমাজসেবী সিদ্ধার্থ দও সাই কম্পিউটার লিমিটেডের আধিকারিকদের উপর তীব্র আক্রমণ করে যেসব প্রশ্ন করেছেন তার একটিরও সদুত্তর দিতে পারে নি উপস্থিত সাই কম্পিউটার লিমিটেডের আধিকারিকরা।বৈঠক চলাকালীন বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ দুইবার ফোন করে খোঁজ খবর নিয়েছেন বলেও মন্ত্রী টিংকু রায় জানান। বৈঠক শেষে মন্ত্রী টিংকু রায় সংবাদ প্রতিনিধিদের মুখোমুখি হয়ে জানান যে, ছাব্বিশ এপ্রিল গভীর রাতে প্রবল ঝড় বৃষ্টি সহ শিলাবৃষ্টির ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খোঁজ নিতে সাতাশ এপ্রিল সমরুরমুখ এলাকায় গিয়েছিলেন। এরপর মূখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার নির্দেশে ফের ত্রিশ এপ্রিল মংগলবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যান এবং বৈঠক করেন। ত্রিশ এপ্রিল রাত থেকে এবং পয়লা মে থেকে গোটা কৈলাসহর মহকুমায় বিদ্যুৎ পরিসেবা স্বাভাবিক হবে এবং পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে মন্ত্রী টিংকু রায় আশ্বস্ত করেন
বাইট- টিংকু রায়।
0 মন্তব্যসমূহ