আদালতের নির্দেশ অনুসারে জোরপূর্বক দখল করা জমি দখল মুক্ত করতে এসে রাষ্ট্রবাদী নেতার দ্বারা বাধা প্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট আদালতের আধিকারিকরা।
জানা গেছে সূর্যমনিনগর বিধানসভার অন্তর্গত চৌমুহনী বাজার লাহোর টিলা এলাকার বুলু সূত্র ধরের চার কানি পিতৃ সম্পত্তি বেশ কয়েক বছর ধরে শক্তি এবং প্রভাব খাটিয়ে দখল করে রেখেছিল শাসক দলের সূর্যমনিনগর এলাকার রাষ্ট্রবাদী নেতা উত্তম রায়। পরে বুলু সূত্রধর একাধিকবার নিজের পিতৃ সম্পত্তি ওই রাষ্ট্রবাদী নেতা উত্তম রায়ের হাত থেকে দখলমুক্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু সেই অন্যের জায়গার লোভ কোনভাবেই সামলাতে পারছিল না শাসকদলের নেতা উত্তম রায়। বুলু সূত্রধর নিজের পিতৃ সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে এলাকার মুরুব্বিদের নিয়ে মিমাংসা সভা হয় আর সেখানে উত্তম রায় জায়গার দখল ছেড়ে দেবে বলে। কি সে পুনরায় আবার সেই বুলু সূত্রধরের জায়গার লোভে পড়ে যায়।এরপর বুলু সূত্রধর সদর মহকুমা প্রশাসন এবং পশ্চিম জেলা প্রশাসনের দারস্থ হন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও রাষ্ট্রবাদী নেতা উত্তম রায় কে জাগার দখল ছেড়ে দিতে নির্দেশ দেয় কিন্তু তারপরেও উত্তম রায় সেই জায়গার দখল ছাড়তে অস্বীকার। অবশেষে বাধ্য হয়ে বুলু সূত্রধর নিজের পিতৃ সম্পত্তি দখলমুক্ত করতে আদালতে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ অনেকদিন আদালতের সেই বিচার চলার পর আদালত নির্দেশ দেয় যে উত্তম দাস সেই জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে তাই সেই জায়গার দখল উনাকে ছেড়ে দিতে হবে। এরপরেও উত্তম রায় আদালতের এই রায় কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সে আবার নিজেই এই জায়গা ওনার নিজের বলে দাবি করে আদালতে মামলা দায়ের করে। সেই মামলার বাদী উত্তম রায় নিজেই নিজের মামলায় হেরে যায় এবং নিম্ন আদালতে হেরে গিয়ে সেই রায় কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করে, উচ্চ আদালতও নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকা নির্দেশ দেয়। এরপর আদালতের এক বিশেষ রায় মূলে বুধবার বিকেলে আদালতের আধিকারিকরা ঢোল পিটিয়ে সেই জায়গা দখলমুক্ত করে বুলু সূত্রধরকে বুঝিয়ে দিতে আসেন। বুধবার বিকেলে আদালত থেকে দখলমুক্ত করতে আসবে সেই কথা আগেই জেনে গিয়েছিল রাষ্ট্রবাদী নেতা উত্তম রায় এবং সে আগে থেকেই সরকারি খাস জায়গায় রাতারাতি বাঁশের বেড়া নির্মাণ করে ফেলে যাতে করে আদালতের আধিকারিকরা দখল করা জায়গায় পৌছাতে না পারে। এদিকে বুধবার বিকেলে নির্দিষ্ট সময়ে আদালতের আধিকারিকরা ওই জায়গা দখল মুক্ত করতে যায় এবং সেখানে আগে থেকেই দলবল নিয়ে উৎপেতে বসে ছিল রাষ্ট্রবাদী নেতা উত্তম রায়। তার দেওয়া বাঁশের বেড়া ডিঙিয়ে যখন আদালতের আধিকারিকরা জায়গাটির দখলমুক্ত করতে ফিতা দিয়ে মাপঝোক করতে যায় ঠিক তখনই উত্তম রায় তার দলবল নিয়ে আদালতের আধিকারিকদের বাধা প্রদান করে এবং হুমকি দিতে থাকে। তারপরেও আদালতের আধিকারিকরা একাধিকবার সেই জায়গাটি দখলমুক্ত করার চেষ্টা করে কিন্তু বারবার উত্তম রায় তার নিজস্ব দলবল নিয়ে আদালতের আধিকারিকদের সরকারি কাজে বাধা দান করেন। অবশেষে বাধ্য হয়ে আদালতের আধিকারিকরা সেই জায়গা দখলমুক্ত না করে পুনরায় ফিরে আসতে বাধ্য হয়। পরে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আদালতের এক আধিকারিক স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছেন উত্তম রায় আদালতের নির্দেশ অমান্য করে আদালতের কাজে বাধা দান করে। এমনকি আদালতের আধিকারিকরা যখন উত্তম রায়কে জায়গার প্রকৃত নথিপত্র দেখাতে বলে কিন্তু উত্তম রায় কোন কিছুই দেখাতে পারেনি। অবশেষে উত্তম রায়ের অশুভ শক্তির কাছে হার মেনে ফিরে আসতে হয় আদালতের আধিকারিকদের। এদিন আদালতের আধিকারিকরা জানিয়েছেন যেভাবে উত্তম রায় আদালতের কাজে বাধা দান করেছে সেই বিষয়টি আদালতের বিচারকের কাছে রিপোর্ট জমা দেবেন। এদিন জায়গার প্রকৃত মালিক ভুল সূত্রধর সাংবাদিকদের কাছে এই ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতে গিয়ে বলেছেন সূর্যমনিনগর এলাকার অতি ক্ষমতাবান রাষ্ট্রবাদী নেতা উত্তম রায় একজন জমিন মাফিয়া। সে এলাকার গরিব অসহায় অনেক মানুষের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে এবং তার বিরুদ্ধে এখনো একাধিক মামলা চলছে আদালতে। এখানে বলা চলে সূর্য মনি নগর বিধানসভা এলাকায় রাষ্ট্রবাদী নেতা নামধারী উত্তম রায়ের মতো এক ব্যক্তিকে শাসক দলের পদে বসিয়ে রেখে নিজেরাই নিজেদের ইজ্জত সম্মান খোয়াতে চলেছে। যদিও হয়তো উত্তম রায়ের এই ধরনের অবৈধ কার্যকলাপের কথা এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ রাম প্রসাদ পালের নজরে নেই। মূলত তার নিজের দলের মুখে চুনকালি মাখতে উত্তম রায় দিনের পর দিন এই ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এলাকার তরফ থেকে অনেকেই দাবি করছে এই ধরনের রাষ্ট্রবাদী নেতাকে যেন দল থেকে বহিষ্কার করে না হলে দলের ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে উত্তম রায় এভাবে আরও আগামী দিনে অনেক ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হবে। তবে উত্তম রায়ের কত বড় স্পর্ধা হলে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ট দেখিয়ে আদালতের আধিকারিকদের সরকারি কাজে বাধা দান করতে পারে। এখন দেখার বিষয় তার বিরুদ্ধে আইন কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

0 মন্তব্যসমূহ