"ভূমি পূত্রদের মন্ত্রী যখন স্বমহিমায়, প্রজারা তখন রাস্তায়"---কথাটি গোলক ধাঁধার হলেও কোন কোন ক্ষেত্রে বাস্তব সম্মতও হয়। রাজ্যের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার নির্বাচনী ভূমিতে সাধারণ মানুষজন এতটাই বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন যে তালা ঝুলল পঞ্চায়েত কার্যালয়ে!
ঘটনা মঙ্গলবার কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত চাকমাঘাট এলাকাতে। বিভিন্ন মহল সূত্রে খবর, এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা সহ উনার স্থলাভিষেক একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত গুটিকয়েক বিজেপি নেতাদের দৌলতে কৃষ্ণপুর বিধানসভার পরিচালনা একেবারে রসাতলে গিয়ে ঠেকেছে। শুধু তাই নয় সূত্রটি জানায়, যেকোনো সময় গোটা কৃষ্ণপুর বিধানসভা এলাকা জুড়ে বিশাল জনরোষ আছে পড়তে পারে।
এলাকাবাসীদের অভিযোগ, ২০১৮ সালের আগে সরকার পরিবর্তনের প্রাক্কালে বিজেপি দলের তরফ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল বিজেপির নেতৃত্বে সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে এলাকার দীর্ঘদিনের সমস্যা রাস্তাঘাট এই বিষয়টাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করা হবে। তবে প্রথম বিজেপি সরকারের পাঁচ বছর এবং বর্তমান বিজেপি সরকার তথা মন্ত্রীর এক বছরের বেশি সময় এলাকার সাধারণ মানুষের ন্যূনতম যোগাযোগ ব্যাবস্থা থেকে শুরু করে পানীয় জলের সমস্যা সমাধান হয়নি এমনটাই অভিযোগ।
দীর্ঘদিন কখনো বা মন্ডল কার্যালয়, কখনো বা মন্ত্রী, কখনো বা মন্ত্রীর চেলা-চামুন্ডা, আবার কখনো বা পঞ্চায়েতে এলাকার মানুষেরা ঘুরছেন শুধুমাত্র রাস্তা করে দেওয়ার জন্য, তবে আশ্বাস আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই জুটেনি তাদের কপালে।
অবশেষে মঙ্গলবার একপ্রকার বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীরা চাকমাঘাট পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। বর্ষামোখর দিনেও একটা ভালো সংখ্যক সাধারণ মানুষ এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল থেকে সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করছেন, তাদের কি মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকার নেই? তাদের প্রশ্ন হচ্ছে আর কতদিন তারা এভাবে সমস্যায় ভুগবে? তাদের প্রশ্ন হচ্ছে, দিনের পর দিন যোগাযোগ ব্যাবস্থার সমস্যার কারণে গোটা এলাকার আর্থসামাজিক ব্যাবস্থা মুখ থুবরে পড়লেও কেন এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা তাদের দিকে মুখ তুলে তাকাচ্ছেন না? কি তাদের অপরাধ?
স্বাভাবিকভাবেই হঠাৎ করে এভাবে রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে খোদ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মার নির্বাচনী এলাকাতে সাধারণ মানুষজন রাস্তা ও জলের দাবিতে এভাবে আন্দোলনের মঞ্চ তৈরি করাতে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। শেষ সংবাদ প্রেরণ পর্যন্ত প্রতিবাদ চলছে, পঞ্চায়েত কার্যালয় তালা বন্ধ রয়েছে, প্রশাসনের তরফ থেকে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করার খবর আপাতত নেই। এলাকাবাসী সূত্রে খবর,, ২৯ কৃষ্ণপুর বিধানসভার চাকমাঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষজনেদের দীর্ঘদিন ধরে চাপা ক্ষোভ বিস্ফোরিত হয়ে চাকমাঘাট মন্ডল কার্যালয় সংলগ্ন অসম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ হলেও হতে পারে।
তবে যেভাবে দিনের পর দিন বিকাশ দেববর্মার নির্বাচনী এলাকাতে একের পর এক কেচ্ছা-কেলেঙ্কারি গুলো সামনে আসছে, সাধারণ মানুষের দুর্বিসহ যন্ত্রণার ঘটনাগুলো নিরন্তর ভাবে সামনে আসছে, তার নিরিখে প্রতিদিন রাজ্যের প্রায় প্রতিটা প্রান্তর থেকে জোরালোভাবে দাবি উঠছে, অনেক হয়েছে এবার মন্ত্রী বিকাশকে সন্ন্যাসে পাঠানো হোক।




0 মন্তব্যসমূহ